Monday, September 22, 2025

গণভবনে টিউলিপের প্রচারপত্র ও সোনার প্রলেপযুক্ত কলমের মোড়কসহ রয়েছে আরও যেসব জিনিসপত্র

আরও পড়ুন

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের প্রচারপত্র, লেবার পার্টির পোস্টার, নামী ব্র্যান্ডের শপিং ব্যাগ, দামি কলমের মোড়ক, বিদেশি বিশিষ্টজনদের উপহার দেয়া পোশাক-গয়না, তৈজসপত্রসহ আরও নানা জিনিস পড়ে আছে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাসভবন গণভবনে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে টিকতে না পেরে গত ৫ আগস্ট গণবভন থেকে পালিয়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর উত্তেজিত হাজার হাজার জনতা গণভবনে ঢুকে লুটপাট চালায়।

সেই থেকে গণভবন কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সাধারণ মানুষের প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। ভবনটি এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। পাহারা দিচ্ছেন আনসার সদস্যরা। গত শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমতি নিয়ে গণভবনে প্রবেশ করে ঘুরে দেখার সুযোগ পান দ্য সানডে টাইমসের প্রতিবেদক।

সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে শেখ হাসিনার সরকারি এই আবাসে কয়েক ডজন কক্ষ আছে এবং রয়েছে বিশাল বাগান ও পুকুর। এই পুকুরে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী মাছ ধরতেন। তার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি আর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় কয়েক শ মানুষকে হত্যার ঘটনায় ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  এমপি আনারের ৪ কেজি মাংস উদ্ধারের দাবি

৫ আগস্ট গণভবনে ব্যাপক লুটপাট হয়। নগদ অর্থ, আসবাব, ফ্রিজ থেকে শুরু করে শাড়ি, গয়না, দামি খাবার—সবকিছু লুটপাট করা হয়। যদিও পরবর্তী সময়ে অনেকে লুটের জিনিস ফেরত দিয়ে গেছেন। তবে এখনো অনেক কিছু ধ্বংসস্তূপ আর ধুলার মধ্যে পড়ে আছে।

ধুলায় ঢেকে থাকা যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপের একটি রাজনৈতিক প্রচারপত্র পড়ে থাকতে দেখা গেল। টিউলিপ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। টিউলিপের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার আমলের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  দেড় লাখ টাকায় বিল্পবের ভারতে পালানোর গুঞ্জন, অডিও ফাঁস

পাশেই একটি মোড়কে পড়েছিল সোনার প্রলেপ দেয়া মন্টব্ল্যাঁ কলমের। যার একটি কলমের দাম দেড় হাজার ডলার। সঙ্গে পড়ে ছিল হীরার মান যাচাইয়ের সনদ।

টিউলিপের সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও কিছু জিনিস এখনো পরিত্যক্ত গণভবনে পড়ে আছে। এর মধ্যে একটি ‘ধন্যবাদ নোট’ দেখা গেছে। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ এলাকা হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের লেবার পার্টির স্থানীয় সদস্যদের উদ্দেশে সেটা লেখা। আরেকটি ছিল টিউলিপের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন।

যদিও ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি বরাবর অস্বীকার করেছেন। ২০১৭ সালে তিনি বলেছিলেন, খালার সঙ্গে ‘কখনোই’ রাজনীতি নিয়ে কথা বলেননি তিনি।

আরও পড়ুনঃ  ইসলামি ছাত্র শিবিরের নতুন সভা*পতি জাহিদুল ইসলাম

এর পর থেকে টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে আসে, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাজ্যে এমন তিনটি সম্পত্তিতে বসবাস করেছেন, যেগুলো শেখ হাসিনার শাসনামলের কর্মকর্তা ও সহযোগীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সানডে টাইমসের অনুসন্ধানে জানানো হয়েছে, এর একটি কেনা হয়েছিল অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে। আলোচিত পানামা পেপারসে ওই কোম্পানির নাম এসেছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, টিউলিপের ব্যবহার করা সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত হয়া উচিত। মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি বেইডনক।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ