Sunday, September 21, 2025

ইরানের পাশে দাঁড়াচ্ছে শক্তিশালী মিত্র দেশগুলো

আরও পড়ুন

ইরান-ইসরাইল সংঘাত ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে রক্তাক্ত এ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে একে একে ইরানের মিত্র দেশগুলো প্রকাশ্যে নিজেদের অবস্থান জানাতে শুরু করেছে। যখন ইসরাইল ইরানি মিসাইলের আঘাতে বিপর্যস্ত, তখন নতুন করে হুমকি তৈরি হয়েছে উত্তর কোরিয়ার দিক থেকেও। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং তুরস্কসহ বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবস্থানকে কেন্দ্র করে।

ইসরাইল যখন ইরানের সামরিক জবাবে নাকাল, তখন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন একটি সরকারি ভাষণে ঘোষণা দেন, “ইরান একা নয়। উত্তর কোরিয়া কখনো মিত্রদের কঠিন সময়ে ছেড়ে যায় না।” এরই ধারাবাহিকতায় দেশটি রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কাছে সুমান এলাকা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে ১০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করে, যা বিশ্বে স্পষ্ট বার্তা দেয়, ইরানের পাশে দাঁড়াচ্ছে পিয়ংইয়ং।

আরও পড়ুনঃ  ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার কোনো ক্ষতি হয়নি: আইএইএ

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, চীন থেকে পাঁচটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান ইরানের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। ফ্লাইট রাডার ২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, বিমানগুলো উত্তর চীন থেকে উড়ে প্রথমে কাজাখস্তান, এরপর উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান অতিক্রম করে ইরানের দিকে অগ্রসর হয়। এক পর্যায়ে বিমানগুলোর রাডার সিগন্যাল বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি পরোক্ষ বার্তা, চীন তেহরানের পাশে আছে।

তুরস্কও মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় সর্বাত্মক সামরিক প্রস্তুতি শুরু করেছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান নেতৃত্বাধীন দেশটি প্রকাশ্যেই ইরানের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান

রাশিয়া স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষে সরাসরি ইরানে হামলা চালায়, তবে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। ভ্লাদিমির পুতিন প্রশাসন কৌশলগতভাবে ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমেরিকাকে সতর্ক করেছে, এই সংঘাত যেন বিশ্বযুদ্ধে রূপ না নেয়।

ইরানের প্রতি আন্তর্জাতিক জনমতের একটি দৃষ্টান্ত দেখা গেছে দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলায়। দেশটির সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে ইরানের প্রতি সংহতি জানায়। তারা ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদ ও ইরানের প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানায়।

আরও পড়ুনঃ  ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পদক্ষেপ নেবো: স্পেনের প্রধানমন্ত্রী

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরাইলের আগ্রাসনের মূল কারণ হচ্ছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে যাচ্ছে এমন সন্দেহ। এই অজুহাতেই ইসরাইল ইরানে নজিরবিহীন হামলা চালায়। তবে আয়াতুল্লাহ খামেনির ইরান একা চুপ করে থাকার মতো দেশ নয়। হামলার পরপরই কঠোর জবাব দিয়ে ইসরাইলকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে তেহরান।

ইসরাইল একা না পেরে আমেরিকার সরাসরি সহায়তা চাইছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইসরাইলকে বিভিন্নভাবে সামরিক সহায়তা দিলেও সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক সামরিক শক্তি মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগতভাবে সংঘাতের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ