Friday, March 14, 2025

‘আমি থেকে কী করুম, আমাকেও নিয়ে যাইতাগা’

আরও পড়ুন

‘আল্লাহ তুমি আমাকে না নিয়ে ছেলেকে কেন নিলা। আমি থেকে কী করুম। আমাকে নিয়ে যাইতাগা’- এভাবেই বৃদ্ধ মা হেলেনা বেগম অবিরাম বিলাপ করছেন। প্রবাসী ছেলেসহ পুরো পরিবারের মৃত্যুর খবরে তিনি দিশেহারা। চিৎকার করতে করতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। তার বুক ভরা কান্না যেন কোনোভাবেই থামছে না।

এ মায়ের ছেলে ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫)। রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনি নিহত হন। তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) ও ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহও (৭) একই ঘটনায় মারা গেছেন।

আরও পড়ুনঃ  ‘পরিবারের তিনজনই অসুস্থ, টাকার অভাবে বাজার করতে পারি না’

এ পরিবারটির বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে। তাদের বাড়ি উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে। তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। একই পরিবারের পাঁচজন নিহতের খবরে পুরো গ্রামও শোকাহত।

জানা গেছে, সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে চারটি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর মগবাজার বিটিসিএল স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন। শুক্রবার (১ মার্চ) তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা এলেনও। কিন্তু লাশ হয়ে একে একে অ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের নিজ বাড়ির উঠোনে ফিরলেন তারা।

আরও পড়ুনঃ  দরজা আটকে শিক্ষার্থীদের নকল দিচ্ছেন শিক্ষকরা

এদিকে লাশ পৌঁছার পর মায়ের আহাজারি আরও বাড়ে। কিন্তু কে তাকে দেবে সান্ত্বনা। বারবার নিজের জীবনের বিনিময়ে ছেলেকে জীবিত দেখতে চাইছেন। বৃদ্ধ মায়ের বিলাপে ভারী হয়ে গেছে পরিবেশ।

সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। দেড় মাস আগে দেশে এসে পুরো পরিবারকে ইতালিতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু আগুনে পুড়ে সবকিছু শেষ।

বিলাপ করতে করতে মা হেলেনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেসহ পুরো পরিবার আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। আমি বেঁচে থেকে আর কী করুম। আমার ছেলেকে রেখে আল্লাহ আমারে নিয়ে যাইতগা। আমি এই শোক সইব কী করে।’

আরও পড়ুনঃ  মারা গেছেন ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি আব্দুল হাই

নিহত পাঁচজনের কবর বাড়ির পাশে একটি কবর স্থানে খোঁড়া হয়। মরদেহগুলো বাড়িতে আসার পর বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের মরদেহ দাফন করা হয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ