Monday, March 17, 2025

জলদস্যুদের কবলে থাকা বাংলাদেশি জাহাজে বিস্ফোরণের শঙ্কা

আরও পড়ুন

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এক সপ্তাহ ধরে সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি রয়েছে। যে কোনো সময় জাহাজে বিস্ফোরণের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমভি আবদুল্লাহয় আছে হাজার হাজার মেট্রিক টন কয়লা। এসব কারণে বিস্ফোরণের আশঙ্কা করছেন তারা।

মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বেলা দেড়টায় জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়লা দাহ্য খনিজ পদার্থ। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ না করা গেলে বিস্ফোরণের ঝুঁকি আছে বলে জানান তারা।

এদিকে, জাহাজ জিম্মি করার এক সপ্তাহ পরও দস্যুদের পক্ষ থেকে এখনো যোগাযোগ না করায়, নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর মধ্যে বারবার জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করছে জলদস্যুরা।

আরও পড়ুনঃ  যথাযোগ্য মর্যাদায় রানীশংকৈলে বিজয় দিবস পালিত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগরে বাল্ক জাহাজে কয়লা পরিবহনে ৫ ধরনের বিপদের আশঙ্কা থাকে। তাই কিছু নিরাপত্তা পদক্ষেপ মেনে চলতে হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় জাহাজের খোলের ভেতরে মিথেন, কার্বন মনোক্সাইড এবং অক্সিজেনের পরিমাপ করতে হয়। বের করে দিতে হয় নির্ধারিত মাত্রার বেশি গ্যাস।

তারা বলছেন, বদ্ধ জায়গায় কয়লা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া মিথেনের পরিমাণ বাড়লে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এ ছাড়া, কার্বন মনোক্সাইড বেড়ে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে নাবিকদের জীবনের ঝুঁকি থাকে।

এ বিষয়ে মাস্টার মেরিনার ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, মিথেন উচ্চমাত্রার দাহ্য গ্যাস। যেকোনো সময় এতে আগুন ধরতে পারে। সাধারণত কয়লাবাহী জাহাজে কাউকে ডেকে সিগারেট খেতে দেয়া হয় না। কারণ, সামান্য সিগারেটের আগুন থেকে সেখানে বড় বিস্ফোরণ হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  আ.লীগকে ক্ষমা মানে চার হাজার সন্তানের মৃ..ত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর

“প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একবার কয়লার কনসেন্ট্রেশন মেপে দেখতে হয়। এটি বিস্ফোরণ-মাত্রার উপরে উঠে গেলে, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্যাস বের করে দিতে হয়। এটা ২৪ ঘণ্টার একটা পর্যায়ক্রমিক প্রতিক্রিয়া;” জানান ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী।

মেরিটাইম খাতে কয়লা ঝুঁকিপূর্ণ কার্গো হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের জাহাজ তদারকির জন্য বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। জিম্মি হওয়ার পর, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  এমভি আবদুল্লাহতে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে সোমালি জলদস্যুরা

সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে জাহাজ মালিক প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, “জাহাজে আমাদের টেকনিক্যাল পারসন আছে। আশা করি জলদস্যুরা সবসময় এই করণীয়টুকু করবে।”

“কারণ, আমরা মনে করছি, স্বার্থরক্ষা, জাহাজ নিরাপদ ও আবাসস্থল নিরাপদ রাখার স্বার্থে নাবিকদের সহযোগিতা করবে জলদস্যুরা;” বলেন মিজানুল ইসলাম।

এর আগে সোমালিয়ার দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়েছিলো একই মালিকের এমভি জাহানমণি নামের একটি জাহাজ। মো. ইদ্রিস ছিলেন সেই জাহাজের নাবিক ।

ইদ্রিস জানিয়েছেন, তাদের যখন বন্দী করে রাখা হয়, তখন কোনো কাজ করতে দেয়া হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে কয়লায় বিম্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ