Saturday, August 2, 2025

নামাজ পড়তে গেলে বলা হতো জঙ্গী অথবা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক আছে

আরও পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ আন্দোলন চলাকালে তাদের উঠিয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রসঙ্গ তুলে বলেছেন, ইন্টারোগেশনের সময় যখন নামাজ পড়তে যেতাম তখন আমাদের বলা হতো—আমাদের জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে অথবা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।

আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া কনভেনশন হলের ঈগল হলে ‘বৈষম্যমুক্ত সশস্ত্র বাহিনী বাংলাদেশ ২.০ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় রূপরেখা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন হাসনাত। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের নানা অপকর্মের কথা তুলে ধরে বলেন, তারা এখনও মাফ চায়নি, অথচ অনেকে তাদের মাফ করে দিচ্ছেন। ছাত্রসামাজ তা কখনোই হতে দেবে না।

হাসনাত বলেন, ডিজিএফআই আমাদের যখন ইন্টারোগেশন করত তখন আমাদের রুম আলাদা করে ফেলা হতো। মেন্টালি ম্যানিপুলেট করা হতো। আমাকে এসে বলা হতো সারজিস কিন্তু মেনে নিয়েছে। সে মিটিং করতে যাবে। আন্দোলনের সময়ে আমার বোন গর্ভবতী ছিলেন। তিনি কুমিল্লায় থাকতেন।

আরও পড়ুনঃ  মোদির শপথের সময় রাষ্ট্রপতি ভবনে ‘রহস্যময়’ প্রাণী

তারা আমাকে বলত–যেহেতু সারজিস এবং হাসিব মিটিং করতে যাবে, সেহেতু তুমি যদি সেখানে না যাও তাহলে আমরা আমাদের কুমিল্লার যে ফোর্স রয়েছে তাদের দিয়ে তোমার বোনকে উঠিয়ে নিয়ে আসব। ইন্টারোগেশনের সময় যখন নামাজ পড়তে যেতাম তখন আমাদের বলা হতো—আমাদের জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে অথবা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক বলেন, পাসপোর্ট করতে গেলে ডিজিএফআই, স্কুলে ডিজিএফআই, আন্দোলন দমনে ডিজিএফআই, বাজার নিয়ন্ত্রণে ডিজিএফআই! আসলে ডিজিএফআই-এর কাজ কী? ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় পুলিশ তাদের পোশাক পরিবর্তনের দাবি করেছে। তারা সংস্কারের এ দাবি করেছে। আমি মনে করি ডিজিএফআইয়ের পক্ষ থেকে বক্তব্য আসা উচিত, যে তাদেরও সংস্কার প্রয়োজন। তা না হলে অতীতে যে ঘটনাগুলো তারা ঘটিয়েছে সেগুলোর দায় তাদের নিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ‘আমাকে সঙ্গে নিয়ে চলেন, লাশ দেখাব’ যুবকের কথায় হতবাক থানার অফিসার

হাসনাত বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ক্ষমা চাওয়ার আগেই মাফ করে দেওয়া হয়েছে। তারা তো ক্ষমা চায়নি। আমরা কি শুনেছি, আওয়ামী লীগ এই পর্যন্ত কোনো বক্তব্য দিয়েছে? এই গণহত্যার জন্য তারা কি মাফ চেয়েছে? তারা মাফ চাওয়ার আড়ে আপনারা কাদের জন্য তাদের মাফ করে দিলেন? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন পর্যন্ত মাফ না চায়, বিচার নিশ্চিত করে এবং যতদিন না পর্যন্ত জনতা সিদ্ধান্ত নেয়, ততদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পাবলিক অ্যাকসেস আমরা ছাত্রজনতা দেব না। আওয়ামী সরকারের আমলে যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তারা মূলত ওই ফ্যাসিস্ট সরকারের হয়েই কাজ করেছিল। দ্রুততম সময়ে বিগত এই তিনটি সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। যেহেতু তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দিতে হবে। যারা এই তিনটি সংসদে সদস্য ছিল, তাদের সদস্যপদ অবৈধ করার পাশাপাশি তারা যে সুযোগ সুবিধা নিয়েছে সেগুলো ফেরত দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ২০২৫ ঘিরে ভয়ঙ্কর আশঙ্কা, ২০৪৩-এ গোটা ইউরোপ জয় করবে মুসলিমরা !

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির (অব.)। এতে বক্তব্য দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ হাসান, লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রাহমান বীর প্রতীক, লে. কর্নেল (অব.) শাহির, কমান্ডার মোহাম্মদ শাহরিয়ার আকন (অব.), কমান্ডার নেসার আহমেদ জুলিয়াস (অব.), মেজর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (অব.), লেফটেন্যান্ট সাইফুল্লাহ খান (অব.), ক্যাপ্টেন হেফাজ উদ্দিন (অব.)।

এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবি জানান হাসনাত আবদুল্লাহ।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ