Tuesday, September 23, 2025

ছেলেটাকে এমন মারা মারছে, হাসপাতালে নিতে নিতে শেষ

আরও পড়ুন

দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম তামিমের মা খুরশিদা বেগম বলেন, আমার কিছু বলার নাই। আমার ছেলেটা অনেক নিরীহ ছিল। আমার ছেলে কোনোদিন কারও সঙ্গে কোনো বেয়াদবি করে নাই। সবাইকে সালাম দিয়ে কথা বলছে। আমার ছেলেটা যাওয়া মাত্রই মেরে ফেলছে। এমন মারা মারছে, ছেলেটা এসে বলতেছে, মা আমার বুকটা ব্যথা করে।

আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তামিমকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে খুরশিদা বেগম এসব কথা বলেন।

খুরশিদা বেগম বলেন, আমার বাচ্চাটারে বুঝতে পারি নাই। আমার ছেলেটারে হাসপাতালে নিতে নিতে শেষ। আমার ছেলেরে সন্ত্রাসী বানাই নাই। মানুষ বানাইছি। লেখাপড়া শিখাইছি। কেউ বলতে পারবে না আমার ছেলে কোনো খারাপ কাজে জড়িত। ঘটনার মূলে রয়েছে—মো. রুবেল শেখ, মামুন, কবির-এরা ষড়যন্ত্র করে আমার বাচ্চাটাকে মারার জন্য আসছে। আমার বড় ছেলেটাকে পাঁচ-ছয়জন ধইরা রাখছে। আমার বাচ্চাটারে মারতে মারতে মেরেই ফেললো। আল্লাহ, আল্লাহ আমার বাচ্চা হত্যার তুমি বিচার কইর।

আরও পড়ুনঃ  আদালতে বিচারককে পুলিশ কর্মকর্তার গুলি

আহাজারি করে খুরশিদা বেগম আরও বলেন, আমার বুকটা জ্বলতাছে, জ্বইলা যাইতেছে। আমার বাচ্চাটারে কেমন কইরা মারল। একটা মানুষরে মানুষ এমনে কইরা মারে? রবিউল, মামুনের কাছে একটা প্রশ্ন—আমার বাচ্চাটাকে মাইরা ওদের কী লাভ হইছে? আমার বুকটাকে খালি কইরা দিছে। আমরা কোনোদিন অন্যায়ভাবে কিছু করি নাই। আমরা শতভাগ ঠিক আছি। আমার বাচ্চাটারে যারা ষড়যন্ত্র করে হত্যা করছে আল্লাহ তুমি তাদের বিচার কর। আমি ড. ইউনূসসহ সব উপদেষ্টার কাছে আমার বাচ্চার হত্যার বিচার চাই।

আরও পড়ুনঃ  ট্রাম্পের নির্বাচনী জনসভায় ইলন মাস্ক

মানববন্ধনে তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ, বড় ভাই শামভিল জাহান ইসলাম, ভাবি ফারিয়া, ভাতিজি মুনাজাসহ পরিবারের অন্য সদস্য, সহকর্মী, সহপাঠীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় ‘নতুন বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রাণের নিরাপত্তা চাই’, ‘ঘাতক প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজের অনুমোদন বাতিল চাই’, ‘তামিম হত্যার বিচার চাই’, ‘জাস্টিস ফর তামিম’, ‘বিচার চাই বিচার, বিচার চাই, তামিম হত্যার বিচার চাই’সহ বিভিন্ন দাবি লিখে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার হাতিরঝিল-সংলগ্ন আবাসিক এলাকা মহানগর প্রজেক্টে নিজ বাসায় তামিমকে ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি পিটিয়ে হত্যা করে। তিনি দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তামিমদের জমিতে নির্মাণাধীন ভবনে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় বিএনপি নেতা রবিউল আলম রবি ও মামুনসহ ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ