চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার হাজতখানার ভেতর থেকে আসামির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম মোহাম্মদ জুয়েল (২৬)। বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার হাজতখানায় ওই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, থানা হেফাজতের থাকা জুয়েলকে ওষুধ দিতে এসে স্বজনরা জানতে পারেন তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। থানার সামনে বসেই আহাজারি করতে থাকেন তারা।
পরিবারের সদস্যরা জানায়, এক সময় ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল জুয়েল। তিনি পাঁচ-ছয় মাস আগে থেকেই ভালো হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। শুরু করেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর কাজ।
এক সপ্তাহ আগে তার ব্যাটারিচালিত রিকশাটি চুরি হয়ে যায়। এরপর থেকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার জন্য মালিক পক্ষ চাপ দিতে থাকে। না হলে পরিবারের সদস্যদের হেনস্থা করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। সেই হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে জানান স্বজনরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মো. জুয়েল (২৬) নামে আসামির বিরুদ্ধে ছিনতাইসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। তার বাসা নগরীর চান্দগাঁওয়ের খেজুরতলা এলাকায়।
এদিকে হাজতখানার সামনে থাকা ক্লোজ সার্কিট সিসি ক্যামেরা দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে জুয়েল আত্মহত্যা’ করেছেন। থানার সিসি ক্যামেরার ৭ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ফুটেজে দেখা যায়, আসামি জুয়েল নির্জন হাজতখানার গারদের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর তিনি নিজের শার্ট খুলে ফেলে হাজতের টয়লেটের দিকে এগিয়ে যান। টয়লেটের দেয়ালে দাঁড়িয়ে শার্টটি বাঁধেন ভেন্টিলেটরের সঙ্গে। তার কিছুক্ষণ পর তাকে ঝুলে পড়তে দেখা যায়।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকা থেকে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে থানার হাজতখানায় রাখা হয়। হাজতে জুয়েল একাই ছিলেন। হাজতখানার ভেতরে ভেন্টিলেটরের সঙ্গে নিজের পরনের শার্ট ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন জুয়েল। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পারিবারিক হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। জুয়েলের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে সাতটি মামলা হয়েছে।