Saturday, March 15, 2025

কারফিউর মধ্যেই ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি আজ, জনমনে শঙ্কা

আরও পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে (৪ আগস্ট) ভয়াবহ একটি দিন পার করল পুরো দেশ। প্রায় শত মানুষের মৃত্যু আর অসংখ্য আহত হওয়ার খবর দেশের মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। এরই মধ্যে কারফিউ প্রত্যাখ্যান করে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি জনমনে শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

রোববার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগস্ট থেকে পরিবর্তন করে ৫ আগস্ট করা হলো।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

চূড়ান্ত লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত লড়াই, এই ছাত্র নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ হতে ঢাকায় আসুন সকলে। যে যেভাবে পারেন, কালকের (৫ আগস্ট) মধ্যে ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটাব।’

আরও পড়ুনঃ  প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলামের পদত্যাগ

অন্যদিকে সাংবাদিকদের পেশগত দায়িত্ব পালনে আন্দোলনকারীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের খবর দেশবাসী এবং বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছেন সাংবাদিকরা। পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করুন, সংঘর্ষ-সংঘাতের সময় তাদের রক্ষা করুন। আমাদের এই লড়াইয়ের তারাও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেওয়া রোববারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ শ্রমিক ও নারী সমাবেশ হবে বলেও জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সোমবার সারাদেশে শহীদ স্মরণে শহীদ হওয়ার স্থানগুলোয় শহীদ স্মৃতিফলক উন্মোচন করা হবে। বেলা ১১টায় শাহবাগে শ্রমিক সমাবেশ এবং বিকাল ৫টায় শহীদ মিনারে নারী সমাবেশ হবে। একই সঙ্গে সারাদেশে বিক্ষোভ ও গণ-অবস্থান চলবে।

আরও পড়ুনঃ  ভারতে লাইভ খবর পড়ার সময় গরমে জ্ঞান হারালেন পাঠিকা

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ছাড়তে হবে ক্ষমতা, ঢাকায় আসো জনতা’ স্লোগান সামনে রেখে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’র কর্মসূচিতে সারাদেশের ছাত্র-নাগরিক-শ্রমিকদের ঢাকায় আসার আহ্বান জানাচ্ছি। এদিন দুপুর ২টায় শাহবাগে জড়ো হবেন।

সমর্থকদের উদ্দেশে সমন্বয়ক নাহিদ বলেন, যদি ইন্টারনেট ক্র্যাকডাউন হয়, আমাদের গুম, গ্রেপ্তার, খুন করা হয়, যদি ঘোষণা করার কেউ না-ও থাকে, একদফা দাবিতে সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাই রাজপথ দখলে রাখবেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।

এদিকে সোমবার (৫ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় ক্ষত চিহ্ন। সড়কে সড়কে পড়ে আছে আগুনে ভস্মীভূত হওয়া গাড়ি, ভাঙা কাচ কিংবা ভাঙা ইটের স্তূপ। নগরীর প্রত্যেকের মনে আতঙ্ক কী হতে যাচ্ছে আজ!

আরও পড়ুনঃ  স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত শনিবার (৩ আগস্ট) এক দফা দাবিতে সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনে রূপ নেয়। এ কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা, হামলা ও সংঘর্ষে পুলিশের ১৪ সদস্যসহ প্রাণ গেছে ৯৮ জনের।

এদিকে এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি থেকে জঙ্গি কায়দায় হামলা, সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন সন্ত্রাসী ঘটনা এবং নৈরাজ্য থামাতে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মো. আরাফাত বলেছেন, সরকার কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা দেখতে চায় না। জান-মালের নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ