Monday, August 4, 2025

খালেদা জিয়ার এক পরামর্শেই বদলে গেল রাজনৈতিক দৃশ্যপট

আরও পড়ুন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শেই বদলে গেছে রাজনৈতিক দৃশ্যপট। এর ফলেই আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আগামী জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে- এ নিয়ে কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা ভোটের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার মাধ্যমে কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। তবে এপ্রিল মাসে ভোটের সময় ঘোষণা বিএনপি প্রত্যাখ্যান করায় বিতর্ক পুরোপুরি থামেনি। এ পরিস্থিতির মধ্যে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের সম্ভাব্য সাক্ষাৎ বা বৈঠক।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে গতকাল মঙ্গলবার লন্ডনে পৌঁছেছেন। সফরের আগেই বিএনপি ও সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার সম্ভাব্য সাক্ষাৎ হতে পারে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বৈঠক শুক্রবার সকালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের মতে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক ফলপ্রসূ হলে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার উদ্যোগ এবং জুলাই সনদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে মতপার্থক্য ও দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা অনেকটাই কমে আসতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  আমার গা ঘেঁষে একটা বিষধর সাপ চলে গেল—জীবন বাঁচাতে সেও মরিয়া, আমিও

খালেদা জিয়ার এক পরামর্শেই বদলে গেল রাজনৈতিক দৃশ্যপট
ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠকে প্রাধান্য পাবে ৩ ইস্যু
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফর গত মে মাসের শুরুতেই চূড়ান্ত হয়। এ তথ্য জানার পর থেকেই বিএনপি বিষয়টি বিবেচনায় নেয়- সফরকালে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্য সাক্ষাতের সুযোগ তৈরি হতে পারে কিনা।

আদালতের রায় সত্ত্বেও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে শপথ না পড়ানোকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিক্ষোভ ও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে একধরনের তিক্ততা তৈরি হয়। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ২৮ মে নয়াপল্টনে আয়োজিত এক বৃহৎ সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জানান। পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিল মাসে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করলেও বিএনপির শীর্ষ নেতারা তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। এ প্রেক্ষাপটে লন্ডনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের সম্ভাব্য সৌজন্য সাক্ষাৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ  কমতে কমতে এবার যত হলো রড-সিমেন্টের দাম

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এই সাক্ষাৎ বাস্তবায়নে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শেষ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের আগ্রহে- বিশেষ করে সরকারের বাড়তি উৎসাহে সাক্ষাতের সময় চূড়ান্ত হয়। এ বিষয়ে গত সোমবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। কমিটির সদস্যরা মনে করেন, এই সাক্ষাৎ দেশের ভবিষ্যৎ ও জাতির কল্যাণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা হলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এবং তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি। অন্যদিকে, দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে রয়েছেন। আমরা মনে করি, সরকারের প্রধান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এই সাক্ষাৎ হওয়া উচিত, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচারেরও একটি অংশ। এই সাক্ষাৎ না হলে সমালোচকরা নেতিবাচক মন্তব্য করার সুযোগ পেত।

আরও পড়ুনঃ  কবরস্থান থেকে সাবেক এমপি একরামুলের আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

লন্ডনে অনুষ্ঠেয় এই সাক্ষাৎ ঘিরে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা এই সাক্ষাৎকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। কারণ, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের কার্যকর প্রধানের মধ্যে আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করি, তারা আগামী জাতীয় নির্বাচন ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিয়ে কথা বলবেন।

তবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি দল প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়কে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, এ ঘোষণার মাধ্যমে জাতির মধ্যে আশ্বাস ও প্রত্যাশার এক ধরনের ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ