Monday, March 17, 2025

রাত থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা, আসছে মহাবিপদ সংকেত

আরও পড়ুন

বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতিতে আজ রাত থেকেই মহাবিপদ সংকেত দেখানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

আজ (শনিবার) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মহিববুর রহমান বলেন, এখন ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত রয়েছে। আগামী ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে সংকেত ৩-এ চলে যাবে। সন্ধ্যা নাগাদ এটা ৪-এর ওপরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে আমরা ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস, ভারতের আবহাওয়া অফিস, চীনের আবহাওয়া অফিস, জাপানের আবহাওয়া অফিস এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের আবহাওয়া অফিসের সাথে সমন্বয় রেখে আমরা যেটা পরিষ্কার বুঝতে পারছি আমাদের ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন। আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি।

আরও পড়ুনঃ  আজ সারা দেশে ছাত্রদলের মানববন্ধন কর্মসূচি

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাত ৮টায় আবার এই মন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল ১১টায় আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডেকেছি। এক কথায় এ ঘূর্ণিঝড় আসন্ন, সেটা মাথায় রেখে আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আমাদের কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছি।

কয়টি জেলা আক্রান্ত হতে পারে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি অ্যাফেক্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে। এখন ৫০০ থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থান করছে। বিশেষ করে পায়রা ও মোংলা পোর্টের সরাসরি দক্ষিণে।

সিডরের মতো কি কোনো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে? জানতে চাইলে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা বিপজ্জনক হতে পারে রাত ১২টা-১টা নাগাদ। এটা ১০ নম্বর মহাবিপদে চলে যেতে পারে, এরকম একটা সম্ভাবনা আছে।

তিনি বলেন, কালকে ভোর থেকে এটা প্রাথমিক আঘাত হানার সম্ভাবনা শুরু হবে। কালকে সন্ধ্যা নাগাদ মূলটা আঘাত হানবে। পূর্বাভাসে আমরা এরকমই বুঝতে পারছি ‌এবং আজকে রাত ১২টা-১টা থেকেই এটা ডেঞ্জার পয়েন্টে চলে যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  ১১ মার্চ থেকে রমজান শুরু হতে পারে

তিনি বলেন, উপকূলীয় জেলায় আমাদের প্রায় চার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র আছে। এগুলো আমরা প্রস্তুত রেখেছি। খাদ্যের জন্য আমাদের প্রত্যেকটি জেলায় গুদামে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারসহ যেসব জিনিস দরকার হবে এগুলো মজুত রেখেছি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যাতে আরও সাপ্লাই দিতে পারি এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রেখেছি। সার্বিক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছি।

যা বলছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর
এই নিম্নচাপ সংক্রান্ত ৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে— গভীর নিম্নচাপটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে ও ঘনীভূত হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  বেইলি রোডের আগুনে দুই সন্তানসহ লাশ হলেন মা

গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছাকাছি এবং আশপাশের এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থান করা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হলো।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ