লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধার দল হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় নিহত হওয়ার কয়েকদিন আগে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিলেন। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখোসহ অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদের মাধ্যমে সাময়িক যুদ্ধবিরতির এই আহ্বান জানানো হয়।
লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বু হাবিব যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরকে এমনটি বলেছেন। বুধবার (২ অক্টোবর) প্রচারিত সাক্ষাৎকারে ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (নাসরুল্লাহ) রাজি হয়েছেন, তিনি রাজি হয়েছেন।’
‘আমরা পুরোপুরি একমত। লেবানন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও হিজবুল্লাহর সঙ্গে পরামর্শ করে। লেবানিজ হাউস স্পিকার নাবিহ বেরি হিজবুল্লাহর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন এবং আমরা আমেরিকান এবং ফরাসিদের জানিয়েছি কী সেখান ঘটেছে। এবং তারা আমাদের বলেছিল যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও উভয় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মাঁখোর জারি করা বিবৃতিতে একমত হয়েছেন।
এরপরই হোয়াইট হাউসের সিনিয়র উপদেষ্টা আমোস হোচস্টেইন তখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে লেবাননে যাওয়ার প্রস্তুত নিচ্ছিলেন।
‘তারা আমাদের বলেছেন, নেতানিয়াহু এ বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং তাই আমরাও সে বিষয়ে হিজবুল্লাহর চুক্তির (খসড়া) পেয়েছি এবং তারপর থেকে কী ঘটেছিল আপনি জানেন,’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ করেছেন। লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে শুক্রবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় নাসরুল্লাহ নিহত হন।
একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য এবং কাতারের যৌথ বিবৃতিতে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। সংঘাতকে কূটনীতিক উপায়ে নিরসন করার সুযোগ তৈরি করতে এবং সীমান্তের ওপারে আরও উত্তেজনা এড়াতে চুক্তিতে একমত হন সব পক্ষই।
এই আলোচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন একটি পশ্চিমা সূত্র বলে, যে যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে প্রস্তাবটি প্রকাশ করার কিছুক্ষণ আগে হিজবুল্লাহ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। সিদ্ধান্তটি সরাসরি নাসরুল্লাহর কাছ থেকে এসেছে কি না, সূত্রটি জানায়নি, তবে বলেছে যে চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য সম্মতির প্রয়োজন হবে।
তবে এ বিষয়ে দ্বিতীয় সূত্রটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই ধারনা করতে পেরেছে যে হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হচ্ছে। এদিকে, বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, নাসরুল্লাহ নিজে এই চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন। তবে হিজবুল্লাহ নেতার এমন সম্মতি কী তার হত্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কী না তা স্পষ্ট করেনি সেই সূত্র।