Saturday, March 15, 2025

এবার চাকরি হারানোর শঙ্কায় ৩৫৭৪ পুলিশ

আরও পড়ুন

প্রশিক্ষণরত অবস্থায় উপপরিদর্শক (এসআই) পদের ৩১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার পর চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন এবার প্রশিক্ষণরত ৩ হাজার ৫৭৪ জন কনস্টেবল

এই উভয় পদের জনবল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ পাওয়া বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদের সদস্যদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া
সর্বশেষ ৩ হাজার ৫৭৪ জন কনস্টেবল নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে দলীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রাধান্য পেয়েছে বিশেষ জেলাগুলো। আর এজন্য তাদের বিষয়ে জোরালো তদন্ত শুরু হয়েছে।

এই কনস্টেবলরা নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, রংপুর, খুলনা ও রাঙ্গামাটি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত। আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের কর্মস্থলে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে তাদের নিয়োগ বাতিল করবে নাকি কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হবে, তা নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে আলোচনা চলছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ঢাকার বাসগুলোর দিকে লজ্জায় তাকানো যায় না : কাদের

এদিকে, চাকরিচ্যুত এসআইদের কেউ কেউ ক্ষোভ জানাচ্ছেন। সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো কোনো কাজ তারা করেননি। কী কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো, তা বুঝতেই পারছেন না

ক্ষোভ জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “আল্লাহর কাছে বলে রাখলাম, যদি তিনি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে যেন এই অন্যায় অবিচারের বিচার একদিন না একদিন এই বাংলার মাটিতে দেখে যাওয়ার সুযোগ দেন।

তোমরা যদি জমিনে জুলুম লেখো, আসমানে ইনকিলাব লেখা হবে। সব মনে রাখা হবে, সবকিছু মনে রাখা হবে। বিদায় স্বপ্নের ‘বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি’।”

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্দোলনে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে জড়িত কর্মকর্তাদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শীর্ষ পদ থেকে শুরু করে থানার কনস্টেবল পর্যন্ত অনেককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  বিএনপিকে প্রতিহত করতে হবে: ওবায়দুল কাদের

অবসরে পাঠনো হয় আওয়ামী লীগ সরকারের মতাদর্শী পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্য সদস্যদের। এ ছাড়া গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশের নিয়োগ ও পদোন্নতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে গত সরকারের শেষ সময়ে কনস্টেবল, এসআই ও সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) নিয়োগ পর্যালোচনা চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন শুরুর আগে গত জুন মাসে পুলিশে নিয়োগ পান ৩ হাজার ৫৭৪ জন কনস্টেবল

মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৬৪ জেলায় চার পর্বে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই সময়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সব মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক), পুলিশ সদর দপ্তরের রিক্রুটমেন্ট ও ক্যারিয়ার প্ল্যানিং শাখা, ৬৪ জেলার পুলিশ সুপাররা বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। নিয়োগে বিশেষ ঢাকা বিভাগকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের কাছে তথ্য আছে, মৌখিক পরীক্ষার আগের দিন পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়োগ শাখা থেকে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এটা করা হয়েছে জেলা পর্যায়ে কর্মরত কিছু সরকারি কর্মকর্তার মাধ্যমে, যারা দলীয়ভাবে পরিচিত

আরও পড়ুনঃ  ছাত্রদের কর্মকাণ্ডে দেখে মনে হয়, তারাই দেশটা স্বাধীন করেছে

লিখিত পরীক্ষায় পাস করা প্রার্থী ও তাদের পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় সংগ্রহ করেছেন এসব কর্মকর্তা। এ প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগবিরোধীদের বাদ দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। সেজন্য কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

তাছাড়া বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছয়টি বিসিএসে পুলিশে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের আমলনামা নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে ২৮, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৪০ ও ৪১তম ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে আট তথ্যের সন্ধান চলছে। আন্দোলনের সময় এসব ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে। প্রশ্ন ওঠে তাদের রাজনৈতিক দর্শন ও আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ